প্রকাশ: ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২১, ০৮:৪৯ পিএম
মাদারীপুরের শিবচরে ৯০ ঊর্ধ্ব বৃদ্ধা মাকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে দিয়ে চলে গেছে মেয়ে পার্বত্য রানী মণ্ডল। তার নিজের বাসা ঢাকায়। এক ভ্যান চালকের সহায়তায় অবশেষে এক নাতনীর বাড়িতে আশ্রয় হয়েছে সহায় সম্বলহীন বৃদ্ধা সাম্প্রীয় বৈরাগীর।
বৃদ্ধা সাম্প্রীয় বৈরাগী ও তার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শিবচর উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়নের সাদেকাবাদ গ্রামের মৃত রাজমোহন বৈরাগীর স্ত্রী সাম্প্রীয় বৈরাগী। সাম্প্রীয় বৈরাগী, মেয়ে পার্বতী, সরস্বতী, ছেলে কুমোদ বৈরাগী, স্বত্ব বৈরাগী ও নিত্য বৈরাগীকে রেখে গত প্রায় ৩০ বছর আগে রাজমোহন বৈরাগীর মৃত্যু হয়। সেই থেকে ২ মেয়ে ও ৩ ছেলেকে নিয়েই ছিলেন সাম্প্রীয় বৈরাগী।
তার মা সাম্প্রীয় বৈরাগীকে গত প্রায় ৪ বছর আগে নিজের কাছে রাখার জন্য গ্রামের বাড়ি সাদেকাবাদ থেকে ঢাকায় নিয়ে যার। তিনি প্রথম অবস্থায় মেয়ের বাসায় সুখ ও শান্তিতেই ছিলেন। তবে করোনা পরিস্থিতি শুরুর পর থেকে বৃদ্ধা মাকে ঘর থেকে সরিয়ে বাসার বেলকনির খালি জায়গায় রাখতে শুরু করে মেয়ে পার্বতী ও তার পরিবার। বেলকনিতেই তাকে খাবারও দেওয়া হতো। চোখের জলে খেয়ে না খেয়ে বেলকনিতেই দিন পার করছিলেন বৃদ্ধা সাম্প্রীয়। তবে এতেও যেন বোঝা হালকা হচ্ছিল না মেয়ে পার্বতীর।
মেয়ে পার্বতী মণ্ডল গত ১৮ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে একটি গাড়িতে করে বৃদ্ধা মা সাম্প্রীয় বৈরাগীকে গ্রামের বাড়ি শিবচরের সাদেকাবাদ এলাকায় নিয়ে এসে ঐ এলাকার একটি কাঁচা রাস্তার পাশে মাকে ফেলে রেখে দিয়ে ঢাকায় ফিরে যায়। রাস্তার পাশে পড়ে কাঁদছিল অসহায় সাম্প্রীয়।
স্থানীয় এক ভ্যানচালক আনোয়ার মিয়া তাকে সন্ধ্যার দিক দেখতে পেয়ে নিজ বাড়িতে নিয়ে যায়। পরে বৃদ্ধা সাম্প্রীয় মাদবরচর ইউনিয়নের ডাইয়ারচর গ্রামের তার বড় ছেলের মেয়ে নাতনী রিতা রানী মণ্ডলের শ্বশুর বাড়ির কথা বলে। পরের দিন শুক্রবার ভ্যানচালক আনোয়ার বৃদ্ধা সাম্প্রীয়কে তার নাতিন জামাই ডাইয়ারচর গ্রামের দয়াল মণ্ডলের ছেলে জগদীশ মণ্ডলের বাড়িতে পৌঁছে দেয়। সেখানেই নাতনির আশ্রয়ে আছেন সাম্প্রীয় বৈরাগী।