প্রকাশ: ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২১, ০৫:০৬ পিএম
নীলফামারীতে কার্টুন দেখতে মোবাইল ফোন চাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে আট বছরের সন্তানকে হত্যা করেছে বাবা। এ রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। দীর্ঘ ১০ মাসের তদন্তে লোমহর্ষক এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উৎঘাটন হয়।
ঘাতক নুর মোহাম্মদ এ ঘটনায় দোষ স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন ।
আজ শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রংপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কর্তৃক পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আরো পড়ুন: টাকার মেশিন এমপি নূর মোহাম্মদের বিকাশ নাম্বার!
বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা গেছে, নীলফামারীর সৈয়দপুরের রসুলপুর রেল কোয়ার্টারে ৫/৬ বছর থেকে পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন নুর মোহাম্মদ। ২০২০ সালের ৩ এপ্রিল জুমার নামাজ শেষে স্ত্রী এবং দুই সন্তান নূপুর (৮) ও আবু সোহানসহ (৭) বাড়িতে টিভি দেখছিলেন নুর মোহাম্মদ। দুই সন্তানের খুনসুটির একপর্যায়ে নূপুর কার্টুন দেখতে বাবার অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল বারবার চাইলেও তা না দেয়ায় বাবাকে গালি দেয় নুপুর। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নিজের মেয়ের গলা চেপে ধরে নুর মোহাম্মদ। একপর্যায়ে নূপুরের মৃত্যু হয়। পরে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে নূপুরের লেহেঙ্গার ওড়না দিয়ে কাপড় শুকানোর রশিতে ফাঁসি দিয়ে ঝুলিয়ে রাখেন বাবা নুর মোহাম্মদ।
আরো পড়ুন: গর্ভধারিণী মাকে পিটিয়ে আহত করলেন কুলাঙ্গার ছেলে
এ ঘটনায় ওইদিন সৈয়দপুর থানা পুলিশ অপমৃত্যু মামলা হলে দীর্ঘ ১০ মাস তদন্ত করেও রহস্য উদঘাটন করতে না পারায় তদন্ত কর্মকর্তার আদালতে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রংপুর পিবিআইকে মামলার তদন্তভার হস্তান্তর করে আদালত।
পিবিআই পুলিশ সুপার জাকির হোসেনের নেতৃত্বে তদন্ত কর্মকর্তা নুরে আলম সিদ্দিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও আলামত সংগ্রহ করে বিষয়টি সন্দেহজন হওয়ার নুর মোহাম্মদকে আটক করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করেন। একপর্যায়ে নুর মোহাম্মদ মোবাইল চেয়ে বারবার বিরক্ত করা ও গালি দেয়ায় নিজ সন্তানকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে প্রচারের কথা স্বীকার করেন। পরে সৈয়দপুর আমলী আদালত-২ এর সিনিয়র ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি। বিচারক শুনানি শেষে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এ ব্যাপারে রংপুর পিবিআই পুলিশ সুপার এ বি এম জাকির হোসেন বলেছেন, ঘটনার ১০ মাস পর মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেয়া হলে মাত্র ১১ দিনের মাথায় মূল রহস্য উদঘাটনে সক্ষম হই। ঘাতক নুর মোহাম্মদ আদালতের স্বীকারোক্তির পর তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।