প্রকাশ: ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২১, ১২:২২ এএম
আবারো বেগমগঞ্জে জঘন্যভাবে নারী নির্যতনের ঘটনা ঘটেছে। মাকে কোমল পানীয়ের সাথে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অজ্ঞান করার মেয়েকে অস্ত্রের মুখে বিবস্ত করে ধর্ষণের পর সেই ভিডিও ধারণ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার রাতে বেগমগঞ্জ থানায় এ ঘটনায় একই এলাকার রাসেল (২৫), জোবায়ের (২৪), সাইফুল ইসলাম ইমন (২২) এবং ফয়সাল নামের চার যুবকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগীর মা। এরপর ওইদিন রাতেই বেগমগঞ্জ পুলিশ অভিযান চালিয়ে সাইফুল ইসলাম ইমন ও ফয়সালকে গ্রেফতার করে।
ঘটনার বিষয়ে ভুক্তভোগী মেয়েটির মা বলেন, বেগমগঞ্জ থানার ইমন, রাসেল ২০১৮ সাল থেকে নোয়াখালীর আমার মেয়েকে উত্ত্যক্ত করত। এ বিষয়ে নিষেধ করলে তারা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে বলে আমাদের কথায় রাজি না হলে তোর মাকে মেরে ফেলব।’
ভুক্তভোগী মেয়েটির মা আরো বলেন, ‘একদিন তারা দুইজনই আমাদের বাড়িতে এসে আমাকে কৌশলে কোমলপানীয়র সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে অস্ত্রের মুখে মেয়েকে বিবস্ত্র করে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ করে। পরে এক দোকানিকে ডেকে এনে জোর করে মেয়ের সঙ্গে দাঁড় করিয়ে উভয়কে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে তারা।’
তিনি আরো বলেন, ‘পরে ওই ভিডিও ভাইরাল করার ভয় দেখিয়ে টাকা, স্বর্ণালংকার নিয়ে যায় এবং একাধিকবার তার মেয়েকে ধর্ষণ করে। বাধ্য হয়ে মেয়েকে বিয়ে দিয়েও রেহাই পাইনি। বিয়ের পরে মেয়ে বেড়াতে আসলে তাকে তুলে নিয়ে যায়। এ সময় তারা ঘর থেকে ৫০ হাজার টাকা, ১ ভরি স্বর্ণালংকারও নিয়ে যায়। এরপর থেকেই ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে নিয়মিত চাঁদা নিতে থাকে। দীর্ঘ তিন বছরেরও বেশি সময় সন্ত্রাসীদের ভয়ে মুখ খুলিনি। এর আগে থানায় অভিযোগ দিয়েও কোনো সুফল পায়নি। গণমাধ্যমকর্মীদের সাহায্যে পুনরায় আইনের আশ্রয় নিয়েছি।’
ভুক্তভোগী মেয়েটির মা বলেন, বিয়ের পরে মেয়ে বেড়াতে আসলে তাকে তুলে নিয়ে যায়। উঠিয়ে নেয়ার তিন মাস পরে রাসেলকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে মিরপুরের একটি বাসা থেকে তাকে উদ্ধার করে আনি। এ ঘটনার ১৫ দিন পর রাসেল পুনরায় মেয়েকে বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। ১০ দিন পর আবারও ১০ হাজার টাকা দিয়ে মেয়ে নিয়ে আসি।
সর্বশেষ গত ২৪ ডিসেম্বর রাসেল আবার আমার মেয়েকে নিয়ে যায়। এখন সে কোথায় আছে, কীভাবে আছে জানি না। গত সপ্তাহে রাসেল প্রস্তাব দিয়েছে এবার ১ লাখ টাকা দিতে। টাকা না দিলে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে- বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এদিকে বেগমগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ কামরুজ্জামান সিকদার ঘটনার বিষয়ে জানান, ভুক্তভোগীর মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ দুইজনকে আটক করেছে। পুলিশ বিষয়টি গুরুত্বেও সঙ্গে দেখছে। পরবর্তীতে এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।